সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বা যন্ত্রকৌশল পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ও বিস্তৃত ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্র। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংকে বলা হয় মাদার অব ইঞ্জিনিয়ারিং। যন্ত্র প্রকৌশল প্রকৌশলের একটি বিষয় যাতে যান্ত্রিক ব্যবস্থাসমূহ রক্ষণাবেক্ষণ, নকশা, উৎপাদন এবং বিশ্লেষণের জন্য পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রগুলো ব্যবহার করা হয়। বলবিজ্ঞান, গতিবিজ্ঞান, তাপগতিবিজ্ঞান এবং শক্তি সম্বন্ধে একটি সুস্পষ্ট জ্ঞান এই প্রকৌশল অধ্যয়নের জন্য প্রয়োজনীয়। যন্ত্র প্রকৌশলীরা মোটরগাড়ি, বিমান, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, শিল্প কারখানার যন্ত্রপাতি নির্মাণ এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের যন্ত্রাদি নির্মাণে এই জ্ঞান ব্যবহার করেন। 

একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের কাজঃ

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা ছোট পার্টস থেকে শুরু করে অনেক বড় বড় মেশিন, যন্ত্রপাতি বা যানবাহন ডিজাইন ও সেই পণ্য উৎপাদনের পুরো পদ্ধতিকে অধিক কর্মক্ষম করার জন্য কাজ করে থাকেন। তারা একটা পণ্য তৈরির সকল পর্যায়ে (গবেষণা,নকশা, উৎপাদন, ইনস্টলেশন এবং চূড়ান্ত চালু) কাজ করতে পারেন। তাদের কাজগুলো সাধারণত নিম্নরূপঃ

  • আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও টেকশই সরঞ্জাম ডিজাইন ও তৈরি করা।
  • অন্যান্য শ্রেণীর ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে আলোচনা করে কোন প্রজেক্টের জন্য প্রয়োজনীয় দিকগুলো বাছাই করা
  • তাত্বিক ডিজাইনের কার্যকারিতা জানার জন্য সিমুলেশন করা ও সেই অনুয়াযী ডিজাইনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা।
  • পণ্য সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য উৎপাদন বিভাগের লোকজন, সরবরাহকারী এবং গ্রাহকদের সঙ্গে আলোচনা করা।
  • প্রকৌশল ও অন্যান্য খাতের পেশাদারদের সঙ্গে কাজ করা।
  • যন্ত্রপাতির মেইনটেনেন্সের দায়িত্ব পালন করা।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মক্ষেত্রঃ


মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে প্রায়ই প্রতিটি ক্ষেত্রে। সরকারি, বেসরকারি সেক্টরে এমন কি দেশের বাইরেও তাদের চাহিদা রয়েছে। উল্লেখ্যযোগ্য কিছু কর্মক্ষেত্র হল-

  • মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা অর্জনের পর ২য় শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে চাকরির সুযোগ আছে।
  • সরকারি, বেসরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে জুনিয়র ইন্সট্রাকটর হিসেবে।
  • ইঞ্জিনিয়ারিং, ট্রান্সপোর্ট, ম্যানুফ্যাকচারিং, কন্সট্রাকশন এবং প্রসেসিং কোম্পানি।
  • ইউটিলিটিজ ( গ্যাস,পানি, বিদ্যুৎ প্রভৃতি ) কোম্পানি
  • রেলওয়ে, বিমান, অটোমোবাইল, রিফাইনারি ইন্ডাস্ট্রি।
  • পরমাণু শক্তি কমিশন, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা কেন্দ্র সহ অন্যান্য বৃহত্তম সরকারি প্রতিষ্ঠান।
  • বিভিন্ন ধরনের পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি যেমনঃ BPDB, DESCO, DPDC, PGCB, EGCB, NESCO, EGCB, NPCBL ইত্যাদি
  • সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা যেমনঃ পেট্রোবাংলা, সিটি কর্পোরেশন, BIWTA, BRTA, BRTC, WASA ইত্যাদি
  • কনসালটেন্সি এজেন্সি।
  • R & D বেইজড কোম্পানি
  • সিভিল সার্ভিস।
  • আর্মড ফোর্স।
  • সরকারি এজেন্সি।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর পদবীঃ
  • উপ-সহকারী প্রকৌশলী
  • সহকারী প্রকৌশলী (পদোন্নতি সাপেক্ষে)
  • প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ার/ সুপারভাইজার
  • প্লান্ট ইনচার্জ
  • মেইনটেনেন্স ইঞ্জিনিয়ার

ভর্তির যোগ্যতাঃ
ন্যূনতম এসএসসি/সমমান পাস।
সাধারণ গণিতে ন্যূনতম জিপিএ ২.০০ এবং ৪০% নম্বর
বয়স এবং এসএসসি পাসের বছরের জন্য কোন সীমাবদ্ধতা নেই

উচ্চ শিক্ষার সুযোগঃ
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সম্পূর্ণ ডিপ্লোমা করার পরে তাদের বিএসসি শেষ করার সুযোগ রয়েছে। এবং M.Sc. DUET, IEB এবং বাংলাদেশের অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। ছাত্ররাও তাদের B.Sc. , M.Sc. এবং বিদেশ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি।

পাঠ্যক্রমঃ
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের (বিটিইবি) ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পাঠ্যক্রম তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক উভয় উপাদান নিয়ে গঠিত। প্রোগ্রামটির লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে জ্ঞান এবং দক্ষতা প্রদান করা যাতে তারা বিভিন্ন শিল্প, সরকারী সংস্থা এবং নির্মাণ কোম্পানিতে কাজ করতে পারে। প্রোগ্রামের সময়কাল চার বছর, এবং এটি আটটি সেমিস্টারে বিভক্ত।